অনলাইন ডেস্ক : দীর্ঘদিনের ভোগান্তি শেষে আজ শরীয়তপুরের যাত্রীরা বাসে করে পদ্মা সেতু পার হয়ে ঢাকায় গেলে।

প্রায় ১৮ বছর পর আজ রোববার সকাল সাড়ে ৮টায় শরীয়তপুর পৌর বাস টার্মিনাল থেকে ঢাকার সঙ্গে সরাসরি বাস চলাচল শুরু হয়েছে। পদ্মা সেতু পেরিয়ে প্রথম বাসটি ঢাকার যাত্রাবাড়ীতে পৌঁছায় বেলা ১১টার দিকে। দীর্ঘ অপেক্ষার পর পদ্মা সেতু পার হতে পেরে উৎফুল্ল চালক ও যাত্রীরা।

ফেরিতে পদ্মা নদী পার হয়ে আগে শরীয়তপুর থেকে ঢাকায় বাস চলাচল করত। কিন্তু ফেরিতে অতিরিক্ত সময় লাগা, যাত্রীদের দুর্ভোগসহ নানা কারণে বাস মালিকেরা লোকসানের মুখে ২০০৪ সালে ঢাকার সঙ্গে সরাসরি বাস চলাচল বন্ধ করে দেন। দীর্ঘদিনের ভোগান্তি শেষে আজ শরীয়তপুরের যাত্রীরা বাসে করে পদ্মা সেতু পার হয়ে ঢাকায় গেলেন।

শরীয়তপুর সদর উপজেলার বাসিন্দা মীম আক্তার বলেন, ‘আমাদের ঢাকায় যেতে হলে নৌপথে পদ্মা নদী পাড়ি দিয়ে দুই দফা বাস পাল্টাতে হতো। আজ বাসের প্রথম যাত্রী হিসেবে পদ্মা পাড়ি দিয়ে আমি উচ্ছ্বসিত, আনন্দিত। পদ্মা নদী পার হতে প্রতিবারই ভয়ে আর আতঙ্কে কুঁকড়ে যেতাম। আজ সেই পদ্মা পাড়ি দেওয়ার সময় মনে আনন্দ ছিল, স্বস্তি ছিল। বারবার জানালা দিয়ে উঁকি দিয়ে নদীর রূপ দেখার চেষ্টা করেছি। হাত নেড়ে উচ্ছ্বাস প্রকাশ করেছি।’

শরীয়তপুর সুপার সার্ভিস পরিবহনের চালক মো. দেলোয়ার হোসেন বলেন, ‘শরীয়তপুরের আমিই প্রথম চালক, যিনি বাস চালিয়ে পদ্মা সেতু পারি দিয়েছেন। এ এক অন্য রকম অনুভূতি, যা বলে বোঝাতে পারব না। আমার ২০ বছরের গাড়ি চালানোর জীবনে এমন আনন্দময় মুহূর্ত আসেনি।’

ঢাকার গুলিস্তান থেকে বিআরটিসি বাসে করে শরীয়তপুর সদরের মনোহর বাজার পৌঁছেছেন রিফাত হোসেন। তিনি বলেন, ‘পদ্মা সেতু যে আমাদের জীবনমানের উন্নয়ন ঘটাবে, তা আজ ঢাকা থেকে শরীয়তপুর এসে উপলব্ধি করলাম।

তিনি আরও বলেন, জীবনে কখনো চিন্তা করিনি আড়াই ঘণ্টায় ঢাকা থেকে বাড়ি আসব। গতকাল পর্যন্ত ঢাকা যেতে পাঁচ থেকে ছয় ঘণ্টা সময় লাগত। সময় বাঁচলে অর্থ বাঁচবে, আর অর্থ বাঁচলে আমাদের সমৃদ্ধি হবে।’

শরীয়তপুর বাস মালিক সমিতির সভাপতি ফারুক আহম্মেদ তালুকদার বলেন, ‘সকাল সাড়ে ৮টায় আমাদের শরীয়তপুরবাসীর যোগাযোগে নবদিগন্তের সূচনা হলো। বেলা ১১টা পর্যন্ত ১২টি বাস ঢাকার উদ্দেশ্যে ছেড়ে গেছে। শরীয়তপুর থেকে অন্তত ৩০০ বাস চলাচল করবে। এখানকার পরিবহন ব্যবসায়ীরা এমন প্রস্তুতি নিয়ে রেখেছেন।’

সুত্র : প্রথম আলো

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *