বিনোদন ডেস্ক: ২০১০ সালের দিকে যার ‘মেম্বারের মাইয়া’ অ্যালবামের গানে বুঁদ ছিল সারাদেশ, সেই কণ্ঠশিল্পী শামীম হোসেন সময়ের স্রোতে হারিয়ে গেছেন বিস্মৃতির অতলে। একসময়ের জনপ্রিয় এই শিশুশিল্পী এখন জীবন চালান যশোরের চৌগাছার পথে পথে বাদাম বিক্রি করে। সম্প্রতি ফেসবুকে তার বাদাম বিক্রির একটি ভিডিও ভাইরাল হলে নতুন করে আলোচনায় আসেন তিনি।
শামীমের গাওয়া ‘তুমি কার লাগিয়া’, ‘তুমি জ্বালাইয়া গেলা প্রেমের আগুন’-এর মতো গানগুলো ক্যাসেট ও সিডির যুগে তুমুল জনপ্রিয়তা পেয়েছিল। একে একে তার ১০টি অ্যালবামও প্রকাশিত হয়। কিন্তু এই আকাশছোঁয়া জনপ্রিয়তার আড়ালে ছিল নির্মম শোষণ। শামীম জানান, ছোটবেলায় এলাকার এক পরিচিত ব্যক্তি তাকে ঢাকা নিয়ে যান এবং তার মাধ্যমেই অ্যালবামগুলো প্রকাশিত হয়। কিন্তু গানের বিনিময়ে তিনি কোনো পারিশ্রমিক পাননি। রেকর্ডিং শেষে দুই বেলা খাবার খাইয়েই তাকে বিদায় করে দেওয়া হতো।
অনলাইন ও ইউটিউবের যুগ শুরু হলে কদর কমে ক্যাসেট ও সিডির। এর সাথে সাথেই যেন ফুরিয়ে যায় শামীমের প্রয়োজন। এরপর আর কেউ তার খোঁজ নেয়নি। অভিমান আর যোগাযোগহীনতায় শামীমও নিজেকে গুটিয়ে নেন। তিনি মনে করেন, কোনো অভিভাবক না থাকাই তার এই পরিণতির মূল কারণ। অর্থনৈতিক সংকটে একপর্যায়ে বেঁচে থাকার তাগিদে বাদাম বিক্রি শুরু করেন তিনি।
ভাইরাল হওয়ার পর অনেকেই ফোন করে তার খোঁজ খবর নিচ্ছেন, কিন্তু গানের সুযোগ এখনো মেলেনি। শামীম বলেন, “আমি আবার গানে ফিরতে চাই। কেউ সুযোগ দিলে অবশ্যই কাজ করব। কিন্তু কার কাছে যাব আমি? কারও সঙ্গে যোগাযোগ নেই।”
তিন বছর আগে নিজের নামে ফেসবুক পেজ ও ইউটিউব চ্যানেল খুললেও অর্থের অভাবে নতুন কোনো গান প্রকাশ করতে পারেননি। তবুও স্বপ্ন দেখেন, একদিন আবারও নতুন গানে কণ্ঠ দেবেন তিনি, ফিরবেন তার ভালোবাসার জগতে।