চট্রগ্রাম প্রতিনিধিঃ
শনিবার রাত সাড়ে ৯টায় আগুনের সূত্রপাত, তারপর থেমে থেমে বিস্ফোরণ। সময় যত গড়িয়েছে বেড়েছে আগুনের তীব্রতা। ফায়ার সার্ভিসের ২৫টি ইউনিটের আপ্রাণ চেষ্টার পরও রোববার সকাল পর্যন্ত চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ডে বিএম কনটেইনার ডিপোতে লাগা আগুন নিয়ন্ত্রণে আনা সম্ভব হয়নি।
এদিকে ভোরের আলোর ফুটার সঙ্গে সঙ্গে আগুনের তাণ্ডব আরও স্পষ্ট হচ্ছে। বাড়ছে মৃতের সংখ্যাও। শনিবার রাত পর্যন্ত বিস্ফোরণের ঘটনায় তিনজনের মৃত্যুর খবর পাওয়া যায়। যদিও এ সংখ্যা বাড়তে সময় লাগেনি বেশি। ভোরে আলো ফুটার আগেই সেই সংখ্যা ১০ পেরিয়ে যায়। সবশেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত দুই ফায়ার ফাইটারসহ ১৬ জনের মৃত্যুর খবর নিশ্চিত করা হয়েছে। তবে এ সংখ্যা আরও বাড়বে বলে জানিয়েছে ফায়ার সার্ভিস।
সকাল সাড়ে ৬টা থেকে ৭টার মধ্যে সীতাকুণ্ডের কনটেইনার ডিপোর ভেতরে ধ্বংসস্তূপ থেকে দুইজনের মরদেহ উদ্ধার করেছে ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা। এর মধ্যে একজনের ফায়ার ফাইটার রয়েছে। তবে তাদের নাম–পরিচয় কিছু জানা যায়নি। লাশ দুটি চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হচ্ছে বলে জানা গেছে।
ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা জানান, আগুন নিয়ন্ত্রণে আসার পর ঘটনাস্থলে সামগ্রিক তল্লাশি চালানো হবে। তখন হয়ত আরও অনেক মরদেহ পাওয়া যেতে পারে। আগুনে পুড়ে মারা যাওয়ার কারণে অধিকাংশ মরদেহেরই পরিচয় শনাক্ত করা সম্ভব হচ্ছে না। পরিচয় শনাক্তে মরদেহগুলো চট্টগ্রাম মেডিকেলে পাঠানো হচ্ছে। সেখান থেকেই স্বজনদের কাছে হস্তান্তর করা হবে।
পা বিচ্ছিন্নসহ ৯ পুলিশ, ২১ ফায়ার কর্মী ও ৪শতাধিক মানুষ আহত। চট্টগ্রাম ফায়ার সার্ভিস কন্ট্রোল রুমের ডিউটি অফিসার এম এ কফিল উদ্দীন গণমাধ্যমকে বলেন, বিস্ফোরণের ঘটনায় মারা যাওয়াদের মধ্যে এখন পর্যন্ত চারজনের নামপরিচয় জানা গেছে। তারা হলেন, বাঁশখালীর মমিনুল হক (২৪), মো. মহিউদ্দীন (২৪), ভোলা জেলার হাবিবুর রহমান (২৬) ও বাশখালীর রবিউল আলম (১৯)।
তিনি বলেন, আহতের সংখ্যা বাড়তে পারে। কনটেইনারে রাসায়নিক ছিল বলে আমরা ধারণা করছি। তবে ঠিক কী রাসায়নিক ছিল, সে সম্পর্কে নিশ্চিত হতে পারিনি। আহত কয়েকজনের অবস্থা গুরুতর। ডিপো এলাকায় পানির সংকট রয়েছে। সেখানে একটি পুকুর থেকে পানি আনা হয়েছিল, সেই পানিও এখন শেষ পর্যায়ে।
চট্টগ্রাম রেঞ্জের ডিআইজি আনোয়ার হোসেন বলেন, সকাল ৭টা পর্যন্ত আমরা ১৬ জন নিহত হওয়ার খবর পেয়েছি। এর মধ্যে তিনজন ফায়ার ফাইটার রয়েছেন। তবে এ সংখ্যা আরও বাড়তে পারে। এছাড়া আরও কয়েকজন নিখোঁজ রয়েছেন। নিখোঁজদের সন্ধানে অভিযান অব্যাহত রেখেছে ফায়ার সার্ভিস।