অনলাইন ডেস্ক : রাজধানীর ওয়ারীর জুরাইন রেলগেট এলাকায় রাস্তার উল্টো দিক দিয়ে আসা মোটরসাইকেল আরোহীকে আটকে কাগজপত্র দেখতে চাওয়ায় ট্রাফিক সার্জেন্টকে মারধরের ঘটনা ঘটেছে। পরে তাকে উদ্ধারে আসা আরও তিন পুলিশ সদস্যকেও মারধর করা হয়। আহত সার্জেন্ট আলী হোসেনের হাতে ২১টি সেলাই দিতে হয়েছে। তাকে আশঙ্কাজনক অবস্থায় রাজারবাগ পুলিশ হাসপাতালে নেওয়া হয়েছে।
আহত অন্য পুলিশ সদস্যদের মধ্যে এক এএসআইর নাম জানা যায়নি। বাকী দুজন হলেন, ট্রাফিক কনস্টেবল সিরাজুল ইসলাম, শ্যামপুর থানার উপ-পরিদর্শক উৎপল চন্দ্র
মঙ্গলবার (৭ জুন) সকাল পৌনে ১০টার দিকে জুরাইন রেলগেট এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। পরে স্থানীয় থানা পুলিশ গিয়ে ওই চার পুলিশ সদস্যকে উদ্ধার করে।
বিষয়টি নিয়ে ওয়ারী ট্রাফিক বিভাগের অভিযোগ, উল্টোপথে পরিবহন চলাচল আইনত দণ্ডনীয় অপরাধ। এতে সড়কে যানজট তৈরি হয়। ট্রাফিক সদস্যরা উল্টোপথে আসা যানবাহনের বিরুদ্ধে আইনানুসারে ব্যবস্থা নিয়ে থাকে।
সংক্ষুব্ধ ও সুযোগ সন্ধানী একটি গোষ্ঠীর সহযোগিতায় চার পুলিশ সদস্যকে মারধর করা হয়। পুলিশের পক্ষ থেকে এ ঘটনায় মামলার প্রস্তুতি চলছে। ঘটনায় সরাসরি জড়িত তিনজনকে আটক করা হয়েছে।
বিষয়টি নিশ্চিত করে ওয়ারী বিভাগের উপ-কমিশনার (ডিসি) শাহ ইফতেখারুল আলম জানান, মঙ্গলবার সকাল পৌনে দশটার দিকে রাজধানীর জুরাইন রেলগেট এলাকায় উল্টোপথে আসছিল একটি মোটরসাইকেল। মোটরসাইকেলে এক নারীসহ দুজন আরোহী ছিলেন। কর্তব্যরত ট্রাফিক সার্জেন্ট আলী হোসেন কাগজপত্র দেখতে চাইলে মোটরসাইকেল চালক অত্যন্ত দুর্ব্যবহার শুরু করেন এবং পোশাক পরা অবস্থায় অন ডিউটিতে থাকা ট্রাফিক সার্জেন্টের পরিচয়পত্র দেখতে চার্জ করেন। পরে দুজনকে পুলিশ বক্সে নেওয়া হলে সঙ্গে থাকা নারী উত্তেজিত হয়ে চিৎকার-চেঁচামেচি শুরু করেন।
তখন আশেপাশে থাকা সুযোগ সন্ধানী লোকজন নারী লাঞ্ছনার অভিযোগ তুলে সার্জেন্টকে মারধর করে ও পুলিশ বক্স গুড়িয়ে দেয়। অভিযুক্ত মোটরসাইকেল চালক সার্জেন্টের বুকের উপর পা তুলে চেপে বসে। এ সময় ঘটনাস্থলে উৎসুক জনতার মধ্য থেকে একজন সার্জেন্টের হাতে ছুরিকাঘাত করে।
সার্জেন্টকে উদ্ধারে আসা অন্য তিন পুলিশ সদস্য কনস্টেবল, এএসআই ও এক এসআইকে মারধর ও ধাওয়া করা হয়। পরে শ্যামপুর থানা পুলিশ খবর পেয়ে অতিরিক্ত ফোর্স পাঠিয়ে আগত চার পুলিশ সদস্যকে উদ্ধার করে।
আহত চার পুলিশ সদস্যের মধ্যে সার্জেন্ট আলী হোসেনের অবস্থা আশঙ্কাজনক। তাকে রাজারবাগ কেন্দ্রীয় পুলিশ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে তার হাতে ২১টি সেলাই দিতে হয়েছে।
এ ঘটনায় মোটরসাইকেল চালক ও ওই নারীসহ তিনজনকে আটক করে থানায় নেওয়া হয়েছে। আটকরা হলেন, মোটরসাইকেল চালক বার্তা বিচিত্রা নামক পত্রিকার সাংবাদিক পরিচয় দেওয়া মো. রনি, তার স্ত্রী ইয়াসিন জাহান নিশাত ভুইয়া ও শ্যালক ইয়াসির আরাফাত ভুইয়া। তাদের বিরুদ্ধে মামলার প্রস্তুতি চলছে।