‘আলু ভাজি’ যেভাবে ফ্রেঞ্চ ফ্রাই হলো

নিউজ ডেস্কঃ  ফ্রাই বা ফ্রেঞ্চ ফ্রাই বিশ্বের সবচেয়ে জনপ্রিয় সাইড ডিশগুলোর মধ্যে একটি। বিশ্বব্যাপী অন্যতম জনপ্রিয় খাবারটি সম্পর্কে অজানা এই বিষয়গুলো যে কাউকেই বিস্মিত করবে। ডিপস, মেয়োনিজ, কেচাপ এবং এমনকি ভিনেগারের সঙ্গে ফ্রেঞ্চ ফ্রাই ছেলে-বুড়ো সবারই পছন্দ। বার্গার, ফ্রাইড চিকেন, গ্রিলড স্টেক এবং ভাজা মাছের সঙ্গে সাধারণ “সাইড ডিশ” হিসেবে পরিবেশিত এই খাবারটির দেশভেদে সাংস্কৃতিক বৈচিত্রও রয়েছে।

বেলজিয়ামে, আলু ভাজা ঝিনুক কিংবা ডিম ভাজার ওপর সাজিয়ে খাওয়া হয়। যুক্তরাজ্য তার মাছ এবং চিপসের জন্য বিখ্যাত। মধ্যপ্রাচ্যে, পিঠা-রুটি এমনকি শর্মাও আলু ভাজা দিয়ে পরিবেশন করা হয়। কানাডার অন্যতম জনপ্রিয় খাবার পৌটিনের মধ্যেও রয়েছে ফ্রেঞ্চ ফ্রাই।

তবে, নাম কিংবা প্রবল জনপ্রিয়তা সত্ত্বেও ফ্রেঞ্চ ফ্রাই কিন্তু ফরাসি খাবার নয়। এর উৎপত্তিস্থল খুঁজলে হয়ত বেলজিয়ামের নামটি আসতে পারে। ঐতিহাসিকদের দাবি, ১৬ শতকের শেষদিকে ফ্রেঞ্চ ফ্রাই জনপ্রিয় হয়ে উঠছিল।

বেলজিয়ামের ইতিহাস অনুসারে, মিউজ উপত্যকায় বসবাসকারী দরিদ্র গ্রামবাসীরা প্রায়ই নদীতে ছোট মাছ ধরতেন এবং ভেজে খেয়ে ফেলতেন। তবে, শীতকালে যখন নদী বরফ হয়ে ওঠে, তখন মাছ ধরা অসম্ভব হয়ে উঠত। তখন গ্রামবাসীরা মাছ ভাজার বদলে অন্য কোনো খাবারের উৎস খোঁজা শুরু করেন। পরে, গ্রামবাসীরা গাছের মূল, আলু, টুকরো টুকরো করে ঠিক মাছের মতোই ভাজতে শুরু করেন।

মার্কিন সেনারা প্রথম বিশ্বযুদ্ধের সময় বেলজিয়ামে অবস্থানকালে এই আলু ভাজার সঙ্গে পরিচিত হন। তবে কিছু ইতিহাসবিদের দাবি, এই রেসিপিটি ফরাসি শেফ অনার জুলিয়েনের।

১৮৫০-এর দশকে, এই রেসিপিটি এতটাই জনপ্রিয়তা পেয়েছিল যে “ফ্রেঞ্চ ফ্রাইড পটেটোজ” হিসেবে বেশ কয়েকটি আমেরিকান রান্নার বইয়ের মূলভিত্তি হয়ে ওঠে।

মজার বিষয় হচ্ছে, বেলজিয়ামে বিশ্বের প্রথম এবং এখন পর্যন্ত একমাত্র ফ্রেঞ্চ ফ্রাই মিউজিয়াম আছে। সুস্বাদু নাস্তার জন্যও সেখানে একটি দিন নির্ধারিত আছে। প্রতি বছর ১৩ জুলাই মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে “জাতীয় ফ্রেঞ্চ ফ্রাই দিবস” পালিত হয়।

ফ্ল্যান্ডার্সের ডাচভাষী অঞ্চলের সরকার এ বছর বেলজিয়ানের ফ্রেঞ্চ ফ্রাইকে জাতীয় সংস্কৃতির একটি অবিচ্ছেদ্য অংশ হিসেবে স্বীকৃতি দিয়েছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *