শরীয়তপুর প্রতিনিধি : শরীয়তপুরের জাজিরায় দুর্বৃত্ততের হামলায় সাইফুল মালত নামে এক প্রধান শিক্ষক নিহত হয়েছে। মঙ্গলবার রাত ১০টায় উপজেলার খোশাল শিকদার কান্দি এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।
নিহত সাইফুল মালত জাজিরা সদর ইউনিয়নের ০১নং ওয়ার্ডের খোশাল শিকদার কান্দি গ্রামের হাজী কিনাই মালতের ছেলে। তিনি সেনেরচর বি এম মোহাম্মেল হক উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক। সাইফুল জাজিরা উপজেলা ছাত্রলীগের সাবেক ভারপ্রাপ্ত সভাপতি । তার দুই মেয়ে রয়েছে।
এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে সুজন ফকির(২৫) নামে একজনকে আটক করেছে জাজিরা থানা পুলিশ। মঙ্গলবার রাতে খোশাল শিকদার কান্দি এলাকা থেকে তাকে আটক করা হয়। এই ঘটনায় এলাকায় থম থমে অবস্থা বিরাজ করছে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে কয়েকটি মোড়ে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।
স্থানীয় রাজনীতিতে বিরোধের জের ধরেই এই হত্যাকাণ্ড ঘটেছে বলে দাবি করেছেন নিহত সাইফুল মালতের বড় ভাই শামছুল হক মালত। তিনি বলেন, আমার ভাই মারা যাওয়ার আগে তার উপর যারা আক্রমণ করেছে তাদের মধ্যে থাকা কয়েকজনের নাম বলে গিয়েছে, যা তার সাথে থাকা হিরো শেখও জানেন।
সাইফুল মালতের সঙ্গে থাকা হিরো শেখ জানান, মঙ্গলবার রাতে তারা জাজিরা বাজার থেকে সাইফুল মালতের বাড়ির দিকে যাচ্ছিচ্ছেন। পথে হামলাকারীরা তাদের আক্রমণ করলে তিনি পালিয়ে চলে যান। কিন্তু সাইফুল মালতকে তারা কুপিয়ে জখম করে।
স্থানীয়রা জানায়, মঙ্গলবার রাতে সাইফুল মালত জাজিরা বাজার থেকে খোশাল শিকদার কান্দিতে তার নিজ বাড়িতে যাওয়ার পথে ছালাম মালতের বাড়ির সামনে ব্রীজের উপর আক্রমণ করে এলোপাথারিভাবে তাকে কুপিয়ে জখম করে দুর্বৃত্তরা। পরে স্থানীয়রা আহত সাইফুল মালতকে জাজিরা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যায়। অবস্থা গুরুতর দেখে জাজিরা উপজেলা স্বাস্থ্যকমপ্লেক্স থেকে প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে উন্নত চিকিৎসার জন্য তাকে ঢাকায় পাঠানো হলে পথে তিনি মারা যান।
স্থানীয়রা আরও জানায়, আক্রমণকারীরা সাইফুল মালতকে আহত করার পরে তার বাড়িসহ বেশ কয়েকটি বাড়িতে আক্রমণ করে ভাংচুর ও অগ্নিসংযোগ চালায় দুর্বৃত্তরা। এতে করে মালেক মোল্লা নামে একজনের কয়েকটি ঘর পুড়ে যায়।
মালেক মোল্লা বলেন, রাতে হামলাকারীরা পাশের কয়েকটি বাড়িতে ভাংচুর করে এসে আমার বাড়িতে ভাংচুর করে অগ্নিসংযোগ চালায়। এতে আমার দুইটি ঘর পুড়ে ছাই হয়ে যায়। আমি বিষয়টি নিয়ে প্রশাসনের কাছে বিচার দাবি করবো।
জাজিরা ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আ. রহমান হাওলাদার বলেন, আমি চাই ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত সাপেক্ষে দোষীদের আইনের আওতায় এনে কঠিন বিচার করা হোক।
বিষয়টি নিয়ে জাজিরা থানার ওসি মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, আমরা একজনকে আটক করেছি এবং পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে সেখানে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করেছি। মামলার প্রস্তুতি চলছে, তদন্ত সাপেক্ষে প্রয়োজনীয় আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।