টাঙ্গাইল প্রতিনিধিঃ শাহজাহান আলী (৬০) ও নূরুল ইসলাম (৫৭) সহোদর ভাই। বিয়েও করেছেন সহোদর দুই বোনকে। দু’জনই কৃষক। মঙ্গলবার সকালের নাশতা সেরে ক্ষেতে যান জমির আইল ছাঁটতে। দুপুর গড়িয়ে সূর্য বিকেলের পথে। তবুও বাড়ি ফিরছেন না দুই ভাই। কপালে চিন্তার ভাঁজ বাড়িতে থাকা দুই বোন শাহজাহান ও নূরুলের স্ত্রীর।

দুপুর থেকে খোঁজাখুঁজির একপর্যায় বিকেল ৪টার দিকে বাড়ির পাশেই ছোট্ট ডোবায় শাহজাহানের মরদেহ ভাসতে দেখেন তার স্ত্রী জায়েদা বেগম (৫০)। পরে নূরুল ইসলামেরও মরদেহ উদ্ধার করা হয় ওই ডোবা থেকে।

পরিবারের দাবি, দুই ভাইয়ের মধ্যে কেউ সাঁতার জানতেন না। মঙ্গলবার (১৪ জুন) বিকেলে টাঙ্গাইলের ঘাটাইল উপজেলার সন্ধানপুর ইউনিয়নের গারোরচালা গ্রামে ঘটনাটি ঘটেছে।

শাহজাহান আলীর স্ত্রী জায়েদা বেগম জানান, খেতের আইল ছাঁটার জন্য দুই ভাই একসঙ্গে বাড়ি থেকে বের হয়ে যান সকাল সাড়ে ৮টার দিকে। বাড়িতে তিনি ছাড়া ছিলেন নূরুল ইসলামের স্ত্রী বুলবুলি বেগম (৪৫) আর তার ৮ বছরের ছেলে জুনায়েদ হোসেন। দুপুরবেলা বাড়িতে খাবার খেতে না আসায় চিন্তিত হয়ে পড়েন তারা।

‘দুই বোন মিলে জমিসহ আশেপাশের বাড়িতে খোঁজ করতে যান। অনেকক্ষণ খোঁজাখুঁজির পর বাড়ির পাশের ডোবায় তারা শাহজাহানের মরদেহ পানিতে ভাসতে দেখেন। তাদের চিৎকারে এগিয়ে আসেন পাশের বাড়ির হাফিজুর রহমান ও সাইফুল ইসলাম।’ যোগ করেন তিনি।

হাফিজুর ও সাইফুল জানান, শাহজাহানকে তারা মৃত অবস্থায় উদ্ধার করেন। পরে পাশেই পানির নিচে কাদামাটি থেকে নূরুলের মরদেহ উদ্ধার করেন তারা।

নিহতদের ভাগনিজামাই খাজা মিয়া জানান, শাহজাহানের পাঁচ মেয়ে। সবাইকে বিয়ে দিয়েছেন। ছেলেসন্তান নেই। নূরুল ইসলামের এক ছেলে-মেয়ে। মেয়ে বিয়ে দিয়েছেন, ছেলে স্থানীয় প্রাথমিক বিদ্যালয়ে পড়েন।

সন্ধানপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান শহিদুল ইসলাম শহীদ জানান, ধারণা করা হচ্ছে সাঁতার না জানার কারণেই তাদের মৃত্যু হয়েছে।

ঘাটাইল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আজহারুল ইসলাম সরকার বলেন, ধারণা করা হচ্ছে পানিতে ডুবেই তাদের মৃত্যু হয়েছে। পরিবারের পক্ষ থেকে যদি কোনো আপত্তি না থাকে তবে লাশ দাফন করার জন্য অনুমতি দেওয়া হবে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *