অনলাইন ডেস্কঃ হাজার কোটি টাকা পাচার মামলায় অভিযুক্ত প্রশান্ত কুমার হালদার (পি কে হালদার) কে ফের জেল হেফাজতে নেওয়ার নির্দেশ দিয়েছে কলকাতার ব্যাঙ্কশাল আদালত। মঙ্গলবার (২১ জুন)  বাংলাদেশ থেকে পলাতক এই আসামিকে ১৪ দিনের জেল হেফাজতের নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। মঙ্গলবার (২১ জুন) সকালের দিকে পি কে হালদারসহ তার ৫ সহযোগীকে আদালতে তোলা হয়। পরে আদালতের বিচারকরা শুনানি শেষে অভিযুক্তদের আগামী ৫ জুলাই পর্যন্ত জেল হেফাজতের নির্দেশ দেন।
গত ১৪ মে ভারতের কেন্দ্রীয় অর্থ মন্ত্রণালয়ের তদন্তকারী সংস্থা এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট (ইডি) পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যের উত্তর চব্বিশ পরগনা জেলার অশোক নগরের একটি বাড়ি থেকে পি কে হালদার ও তার পাঁচ সহযোগীকে গ্রেপ্তার করে। পরে তাকে আদালতে হাজির করলে তিন দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন বিচারক। গত ১৭ মে পি কে হালদারের আরও ১০ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন কলকাতার একটি আদালত।পরে ব্যাঙ্কশাল আদালতের আইনজীবী জানান, এই আর্থিক জালিয়াতির ঘটনায় তদন্ত করতে গিয়ে অনেক তথ্য প্রমাণ তাদের হাতে এসেছে।
সেই সময় ইডির কর্মকর্তারা আদালতকে বলেন, ভারতে অবৈধভাবে বসবাস ও ব্যবসা পরিচালনাকারী বাংলাদেশি নাগরিক পি কে হালদারকে জিজ্ঞাসাবাদে বিপুল সম্পত্তির খোঁজ মিলেছে। ব্যক্তিগত আইনজীবী সুকুমার মৃধার সহায়তায় পি কে হালদার পশ্চিমবঙ্গসহ ভারতের একাধিক রাজ্যে বিপুল সম্পদ করেছেন।
বাংলাদেশ থেকে অবৈধভাবে অর্থপাচারের মাধ্যমে ভারতে একাধিক অভিজাত বাড়িসহ বিপুল সম্পদ গড়ে তুলেছেন বলে খোঁজ পেয়েছে ইডি। প্রাথমিকভাবে ইডি ভারতে তার ১৫০ কোটি টাকার সম্পত্তির সন্ধান পেয়েছে। পরে তাকে প্রথম দফায় তিন দিনের রিমান্ডে নেওয়া হয়।
দুর্নীতি দমন কমিশন ২০২০ সালের ৮ জানুয়ারি পি কে হালদারের বিরুদ্ধে ২৭৫ কোটি টাকার অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগে মামলা দায়ের করে। মামলার অভিযোগে বলা হয়, পলাতক পি কে হালদার তার নামে অবৈধ উপায়ে এবং ভুয়া কোম্পানি ও ব্যক্তির নামে প্রায় ৪২৬ কোটি টাকার অবৈধ সম্পদ গড়েছেন।
অবৈধ সম্পদের অবস্থান গোপন করতে ১৭৮টি ব্যাংক অ্যাকাউন্টের মাধ্যমে অর্থ লেনদেন করেন পি কে হালদার। তিনি এসব অ্যাকাউন্টে ৬ হাজার ৮০ কোটি টাকা জমা রাখেন। পাশাপাশি এসব অ্যাকাউন্ট থেকে তার নামে ও বেনামে আরও ৬ হাজার ৭৬ কোটি টাকা উত্তোলন করেন। দুদকের তথ্য বলছে, পি কে হালদার বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের অন্তত ১১ হাজার কোটি টাকা আত্মসাৎ করেছেন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *