ঢাকা-বরিশাল রুটে নামছে নতুন সেবা

অনলাইন ডেস্ক : পদ্মা সেতুর উদ্বোধনকে কেন্দ্র করে দক্ষিণের জনপদের পরিবহন সেক্টরে পরিবর্তনের হাওয়া বইছে। সংশ্লিষ্ট দপ্তরগুলো নতুন নতুন উদ্যোগ নিচ্ছে যান চলাচল স্বাভাবিক করতে। বাস-মালিকরা মহাসড়কে পাল্লা দিতে মেরামত করে নিচ্ছে পরিবহনগুলো।

এদিকে লঞ্চমালিকরা শঙ্কা প্রকাশ করলেও যাত্রী আকর্ষণে চ্যালেঞ্চ গ্রহণ করেছে। তারই মধ্যে নতুন নিয়মিত সার্ভিসে যুক্ত হচ্ছে অর্ধশত শীততাপনিয়ন্ত্রিত মাইক্রোবাস।

মাইক্রো সার্ভিসের সংশ্লিষ্টরা দাবি করছেন, যাত্রীসেবায় অন্য যেকোনো পরিবহনের তুলনায় বেশি জনপ্রিয়তা পাবে এই পরিবহন। এ জন্য পুরোনো গাড়িগুলোকে মেরামত আর নতুন গাড়ি রুটে নামানো হচ্ছে। আগে বরিশাল থেকে পদ্মার এপাড় কাঁঠালবাড়ি পর্যন্ত সার্ভিস থাকলেও সেতু চালু হলে রাজধানীর সঙ্গে নিরবচ্ছিন্ন সেবা দিতে পারবে তারা। তাই তো তোড়জোড়ও এখন বেশি।

মূলত পদ্মা সেতুর উদ্বোধনের মধ্য দিয়ে ছোট এই যানবাহনের সেবা বড় সম্ভাবনা সৃষ্টি করছে। মাইক্রোবাস সার্ভিস চালু হওয়ায় বরিশাল-ঢাকা-বরিশাল যাতায়াতে বাসের থেকে কমপক্ষে এক ঘণ্টার সময় খরচ কমিয়ে আনতে পারবে।

নথুল্লাবাদের মাইক্রোবাসচালক লিটন বলেন, আগে ফেরির কারণে কাঁঠালবাড়ি পর্যন্ত আমরা যেতে পারতাম। ফেরির দীর্ঘসময়ক্ষেপণে যে ভাড়া হতো তা যাত্রীরা দিতে পারতেন না। তবে এখন ফেরির বিড়ম্বনা না থাকায় যাত্রী নিয়ে ঢাকায় পৌঁছে দেওয়া যাবে।

আরেক চালক সুমন বলেন, মাইক্রো সার্ভিসের অন্তর্ভুক্ত মালিক সমিতি প্রস্তুতি গ্রহণ করেছে। উদ্বোধনের পরের দিন থেকে আমরা সার্ভিস শুরু করব।

তিনি আরও জানান, আগে আড়াই ঘণ্টায় কাঁঠালবাড়ি পর্যন্ত যেতাম। ভাড়া নিতাম ২৫০ থেকে ৩০০ টাকা। যাত্রীও ছিল প্রচুর। সেতু চালু হলে যাত্রীরা দ্রুত গন্তব্যে যেতে লঞ্চ ও বাসের চেয়ে মাইক্রো সার্ভিসকে বেছে নেবে তাদের সুবিধার জন্য। এ জন্য বলতে হয় পদ্মা সেতু আমাদের সুদিন ফিরিয়ে দিচ্ছে।

লাইনম্যান আবুল হোসেন বলেন, অনেক লোক আছে, তাদের প্রাইভেট কার কেনার ক্ষমতা নেই। কিন্তু কাজের প্রয়োজনে তাদের দ্রুত যেতে হয়। কয়েক বছর ধরে আমি লাইনম্যানের দায়িত্বে আছি। সেই অভিজ্ঞতা থেকে বলছি, যদি ভালো মানের গাড়ি রুটে থাকে, তাহলে বাস-লঞ্চের চেয়ে বেশি জনপ্রিয় হবে মাইক্রো সার্ভিস।

নথুল্লাবাদ মাইক্রো সার্ভিসের পরিচালক গোলাম কবির বলেন, বরিশালের মালিকানাধীন ২০ থেকে ২২টি আর ঢাকার মালিকানাধীন মিলিয়ে অর্ধশত মাইক্রো মালিক ইতোমধ্যে আমরা সিদ্ধান্ত নিয়েছি যাত্রীসেবা দিতে নিয়মিত পরিবহন চালু রাখব। আমাদের মাইক্রো সার্ভিসের সব গাড়ি হবে শীততাপনিয়ন্ত্রিত। এখন পর্যন্ত ভাড়া নির্ধারণ করা হয়নি। মূলত পদ্মা সেতু উদ্বোধনের পর নির্ধারণ করা হবে।

দক্ষিণাঞ্চলে এখন শিল্প-প্রতিষ্ঠানের মালিক ও কর্মকর্তারা আসবেন। তাই আমরাও চাইব সর্বোচ্চ সেবা দিতে জানিয়ে তিনি বলেন, বরিশালের নথুল্লাবাদ থেকে মাইক্রো সরাসরি গাবতলী পর্যন্ত যাত্রী নিয়ে যাবে। আবার সেখান থেকে যাত্রী নিয়ে বরিশালে এসে পৌঁছে দেবে।

যদিও গোলাম কবির জানান যে মাইক্রো গন্তব্য থেকে ছাড়ার নির্ধারিত কোনো সময়সীমা থাকবে না। যাত্রী পরিপূর্ণ হলেই গাড়িগুলো গন্তব্যের উদ্দেশে ছেড়ে যায়।

বরিশাল জেলা বাস মালিক গ্রুপের সাধারণ সম্পাদক কিশোর কুমার দে জানিয়েছেন, পদ্মা সেতু উদ্বোধন হলেও এখন পর্যন্ত নতুন কোনো পরিবহন যুক্ত হচ্ছে বলে আমার জানা নেই। যতগুলো পরিবহন এই অঞ্চলে চলাচল করত, সেগুলোই যাত্রীসেবা দিয়ে থাকবে। আর মাইক্রো সার্ভিস আমাদের অন্তর্ভুক্ত কোনো পরিবহন নয়।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *