অনলাইন ডেস্কঃ নাটোরের লালপুর উপজেলা আওয়ামীলীগের নতুন কমিটি ঘোষণার প্রায় ৭ ঘন্টার মাথায় সাধারণ সম্পাদক পদের নাম পরিবর্তন করা হয়েছে। এতে রোকনুল ইসলাম লুলুকে বাদ দিয়ে শামীম আহমেদ সাগরকে সাধারন সম্পাদক হিসেবে ঘোষণা করা হয়।

বুধবার রাত ১১টার দিকে নাটোর জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক শরিফুল ইসলাম রমজান স্বাক্ষরিত জেলা আওয়ামী লীগের প্যাডে এই রদবদলের লিখিত ঘোষণা দেন। রাতেই এই ঘোষণাপত্রের খবর সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে।

জানা গেছে, ৮ বছর পর উপজেলা আওয়ামী লীগের ত্রি-বার্ষিক সম্মেলনের দ্বিতীয় অধিবেশনে অনুষ্ঠিত হয়। বুধবার বিকেল ৪ টার দিকে ওই অধিবেশনে  আফতাব হোসেন ঝুলফুকে সভাপতি এবং রোকনুল ইসলাম লুলুকে সাধারণ সম্পাদক করে নতুন কমিটির নাম ঘোষণা করেন সম্মেলনের প্রধান অতিথি বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য ও রাজশাহী সিটি কর্পোরেশনের মেয়র এ.এইচ.এম খাইরুজ্জামান লিটন। পরে রাত  সাড়ে ১০টার দিকে সাধারণ সম্পাদক পদে পরিবর্তন করে দুর্বৃত্তের হাতে নিহত প্রয়াত সাবেক সংসদ সদস্য মমতাজ উদ্দিনের ছেলে  শামীম আহমেদ সাগরকে সাধারণ সম্পাদক হিসেবে ঘোষণা করা হয়। বিকালে ঘোষিত কমিটিতে আহমেদ সাগরকে সহ-সাধারন সম্পাদক হিসেবে রাখা হয়েছিল। এছাড়া নতুন কমিটিতে সহ-সভাপতি আ স ম মাহামুদুল হক মুকুল, ও যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক পদে আমিনুল ইসলাম জয়ের নাম ঘোষণা করা হয়।

আরও পড়ুনঃ  চেতনানাশক খাইয়ে কিশোরীকে ধর্ষণ, গ্রেপ্তার ২

নাম প্রকাশ না করার শর্তে দলের একাধিক নেতা-কর্মী সংবাদমাধ্যমকে  জানান, স্থানীয় সংসদ সদস্য শহিদুল ইসলাম বকুলের প্রিয় ভাজন ও ব্যবসায়ীক পার্টনার রোকনুল ইসলাম লুলু গত বছর খাদ্য বিভাগের  স্থানীয় এক কর্মকর্তাকে অস্ত্রের মুখে উঠিয়ে নিয়ে গিয়ে নির্যাতনের পর প্রায় ছয় লাখ টাকা হাতিয়ে নেয়। এ ঘটনায় রোকনুল ইসলাম লুলুর বিরুদ্ধে থানায় মামলা হলে তদন্ত শেষে পুলিশ তার বিরুদ্ধে চার্জশিট দেয়।

জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক শরিফুল ইসলাম রমজান জানান, রোকনুল ইসলাম লুলু একটি সন্ত্রাসী মামলার চার্জশিটভুক্ত আসামি হওয়ায় তার নাম বাদ দেওয়া হয়। তার বদলে ঘোষিত কমিটির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক শামীম আহমেদ সাগরকে সাধারণ সম্পাদক হিসেবে ঘোষণা করা হয়।

জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আরও জানান, নৌকা বিরোধী বা কোন মামলার আসামি এমন কেউ দলের পদ-পদবি পাবেন না। রোকনুল ইসলাম লুলুকে সাধারণ সম্পাদক করার পর তার বিরুদ্ধে মামলার বিষয়টি জানা যায়। এ নিয়ে তথ্য উপাত্ত্ব সংগ্রহ করার পর সত্যতা পাওয়া গেলে কেন্দ্রীয় নেতাদের সাথে যোগাযোগ করার পর রোকনুল ইসলাম লুলুকে সাধারণ পদ থেকে সরিয়ে শামীম আহমেদ সাগরকে সাধারণ সম্পাদক করে রাতেই ঘোষণা দেওয়া হয়েছে।

তিনি বলেন, রোকনুল ইসলাম লুলুকে দলের সদস্যও রাখা হয়নি। তবে আদালতের মাধ্যমে তিনি দায়মুক্ত হয়ে আসতে পারলে তাকে দলের সম্মানজনক স্থানে রাখা হবে।

আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক এসএম কামাল বলেন, যাদের কমিটিতে রাখা হয়,তাদের প্রত্যেকের কাছে বায়োডাটা চওয়া হয়। কিন্তু রোকনুল ইসলাম লুলুর দেওয়া বায়োডাটায় তার বিরুদ্ধে থাকা মামলার বিষয়টি গোপন করে যান। সংসদ সদস্য শহিদুল ইসলাম বকুল তার নাম প্রস্তাব করেছিলেন। তিনিও বিষয়টি উপস্থিত নেতাদের অবগত করেননি।

সুত্রঃ সমকাল