হোয়াইট নিউজ ডেস্কঃ যারা বলছেন দেশ শ্রীলংকার পথে হাটছে। তাদের বলব অাপনি সঠিক তথ্য জানেন না,তাই এসব বলছেন। গুগলে একটু উকি মারলেই সঠিক তথ্য জানতে পারবেন।
Srilanka rice price লিখে গুগলে সার্চ দিলে দেখবেন Srilanka Rupee LKR 215.36 Per KG. দেখাচ্ছে। শ্রীলংকার রুপিকে এবার বাংলাদেশি টাকায় কনভার্ট করুন। এবার গুগলে Srilanka Rupee to BDT লিখে সার্চ দিন। শ্রীলংকার ঘরে ২১৫.৩৬ বসালে বাংলাদেশের ঘরে ৫৬.৯১ টাকা অটো চলে অাসবে। তারমানে এখন শ্রীলংকায় এক কেজি চাউলের দাম চলছে বাংলাদেশি টাকায় ৫৬.৯১ টাকা যেখানে বাংলাদেশে এক কেজি চাউলের দাম চলছে ৭০ টাকা।
এভাবে সকল পন্যের দাম বাংলাদেশি টাকায় খুব সহজেই বের করতে পারেন। এবার অাপনিই বলুন -দেশ কি শ্রীলংকার পথে হাটছে নাকি অনেক অাগেই শ্রীলংকাকে অতিক্রম করেছে। হয়তো এখন বলতে পারেন শ্রীলংকার জনগণ তাহলে অান্দোলন করে সরকার পতন করলো কেন? দামটাতো বাংলাদেশের চেয়েও কম। শ্রীলংকার প্রেক্ষাপটে জনগন অান্দোলনের সুযোগ পেয়েছিলো যা বাংলাদেশে নেই। বাংলাদেশের সরকার ও প্রশাসন এদিক থেকে অনেক এগিয়ে ও শক্তিশালি। প্রবাদে অাছে মাইর খাবা কয়টা? একটাও না।
যদি হাত পা বেধে নেই? তাহলে অাপনার যে কয়টা খুশি।
বাংলাদেশের জনগনের এখন এই অবস্থা চলছে। যে যার মতো দাম বাড়ালেও বলার মত সাহস শক্তি নেই।
এক সাপুড়ে ১৫ বছর ধরে সাপের খেলা দেখায়।হঠাৎ একদিন খেলা দেখাতে গিয়ে সাপের কামুড় খায়। উপস্থিত জনতা তাকে হাসপাতালে নিয়ে যেতে চায়। কিন্তু সে তার দাম্ভিকতা ও হিরোইজম দেখানোর জন্য বলে এটা কোন ব্যপার না।ঠিক হয়ে যাবে। পরবর্তীতে সাপের বিষ সমগ্র শরীরে ছড়িয়ে পড়লে বাসার লোকজন তাকে ডাক্তারের কাছে নিয়ে যায়। সময় ক্ষেপনের জন্য ডাক্তারের কাছে নেওয়ার পরও সাপুড়ের মৃত্যু হয়। নিজের ভাবমুর্তি রক্ষা করতে গিয়ে সাপুড়ের এই মৃত্যু থেকে অামাদের শিক্ষা নেওয়া উচিত। সরকার এখানে সাপুড়ের ভুমিকায় অভিনয় করছে। বিশ্ব বাজারে মুল্যবৃদ্ধি, রাশিয়া ইউক্রেনের যুদ্ধ এসব ঠুনকো অজুহাতে দেশের জনগণকে অার কতদিন মিথ্যা বুঝ দিয়ে রাখবেন।ছাই দিয়ে আগুন ঢেকে রাখার চেষ্টা না করে এহেন অবস্থা থেকে উত্তরণের উপায় খুজে বের করা উচিৎ।
শেখ মুজিবুর রহমান পুর্ব পাকিস্থান তথা বাংলাদেশের সর্বকালের সবচেয়ে বেশি জনপ্রিয় নেতা হওয়া সত্ত্বেও তার হত্যাতে দেশের অাপামর জনগণ তখন রাজপথ জনসমুদ্রে রুপ দেয় নি।কারন তখন দেশে অভাব ছিলো। পেটে ভাত না থাকলে অমুক ভাই তমুক ভাই স্লোগান বন্ধ হয়ে যাবে। হয়তো আমার কথা গুলো শুনে অনেকেই আমাকে বিএনপির দালাল ভাবতে পারেন। বিশ্বাস করেন আমি আওয়ামী পরিবারের ছেলে। এখন আওয়ামীলীগ বিএনপি করে দলাদলি করার সময় না। দেশকে বাচাতে সবাইকে এক হয়ে কাজ করতে হবে।দেশ এখন কেমন আছে এটা বুঝাতেই আমার এই লেখা। প্রথমত খুজে দেখতে হবে দেশের এহেন পরিস্থিতি সৃষ্টিতে দায়ী কি কি বিষয়?
১. দুর্নীতি
২. অপচয় ও পরিকল্পনায় ভূল
৩. রেমিটেন্স
৪. অর্থ পাচার
উপরোক্ত ৪ বিষয়ই আমার কাছে মুখ্য বলে বিবেচিত।
সমাধান:
১।
দুর্নীতিকে ব্যাগের তলার সাথে তুলনা করতে পারেন।তলা ছিড়ে গেলে যতই জিনিস রাখেন ব্যাগ ভর্তি হবে না।তেমনি দুর্নীতি বেড়ে গেলে দেশ কখনোই উন্নত হবে না। দুর্নীতি করে পিকে হালদারের মত গুটি কয়েক ব্যাক্তি বিদেশে বাড়ী ঘর করে দেশের বারোটা বাজাচ্ছে। মুখে তারা দেশপ্রেমিক হলেও অন্তরে তারা বিশ্বপ্রেমিক।দেশটাকে চুশে অন্য দেশে প্রমোদ ভ্রমণ করছে। উন্নয়নের নাম করে বিভিন্ন প্রকল্পের বাজেট বাড়িয়ে পকেট ভারি করছে। দেশে এত ব্যাংক থাকতেও তারা টাকা রাখেন সুইস ব্যাংকে। দেশে এত জায়গা থাকতেও তারা বাড়ী করেন কানাডাতে। ঘুশ ছাড়া কোন দপ্তরে কাজ হয় না। আইনের সুশাসন প্রতিষ্ঠা করে দুর্নীতি রোধ করতে হবে। সকলের সম্পদের হিসাব নিতে হবে।সম্পদের হিসাবে অসামন্জস্য পেলেই বাজেয়াপ্ত করতে হবে। বিদেশের বাড়ী ঘর ও অর্থ ফিরিয়ে আনতে হবে। এদেরকে বিচারের আওতায় আনতে হবে। দুর্নীতিবাজদের সম্পদ বাজেয়াপ্ত করে রিজার্ভ বাড়াতে হবে।
২। সরকারী বা বেসরকারী সম্পদ ও অর্থ কোথায় অপচয় ও অপব্যয় হচ্ছে তা রোধ করতে হবে। অফিস আদালতে বা সম্পদ ব্যবহারে সাশ্রয়ী হতে হবে। অনেক প্রতিষ্ঠান বা হাসপাতালে বিদেশ থেকে আমদানীকৃত যন্ত্রাংশ অলস পড়ে আছে। কোন কাজে আসছে না। এসব তদন্ত করে শাস্তি দিতে হবে।ঠুনকো প্রকল্পের নাম করে বিদেশ ট্রেণিং বা ভ্রমণ সীমিত করতে হবে।দেশের সম্পদ অপচয় রোধে জবাবদিহিতা রাখতে হবে। সাতার শিখা, হাত দোয়া শিখা,খিচুরী রান্না করা শিখা, প্রধান মন্ত্রীর সফর সঙ্গী নেওয়া, ইত্যাদি বিষয়ে খরচ স্বাভাবিক ও সীমিত করতে হবে। বিমান ভাড়া এনে সরকারের হাজার কোটি টাকা লসের মতো এমন পরিকল্পনাগুলো তদন্ত করতে হবে। বাংলাদেশে বিদেশীদের ইনভেস্ট করায় সুয়োগ বাড়াতে হবে। বিদেশিদের সহজ শর্ত এ কোম্পানি কল কারখানা করতে আওবান করতে হবে। দশ বছর পর দেশে কি হবে ? সেটা আগেই পরিকল্পনা করতে হবে। বেকারদের জন্য কর্মসংস্থান সৃষ্টি করতে হবে।
৩. রেমিটেন্স:
শিক্ষিত দেশপ্রেমিক বিদেশের ব্যাংকে টাকা রাখে। আর অশিক্ষিত বা কম শিক্ষিতরা দেশে টাকা পাঠায়। এখন রেমিটেন্স কমে যাচ্ছে কেন ? সময়ের সাথে তাল মিলিয়ে রেমিটেন্স বাড়তেছে না কেন ? তা খুজে বের করতে হবে। জনশক্তি রপ্তানির ক্ষেত্রে জোর দিতে হবে। পাশের দেশ থেকে কম খরচে বিদেশে শ্রমিক পাঠালেও আমরা কেন কম খরচে পাঠাতে পারছি না? ৭৮ হাজার টাকায় মালয়েশিয়া যাবার কথা থাকলেও কেন ৪/৫ লক্ষ লাগে? মুলকথা জনশক্তি রপ্তানিতে দুর্নীতি রোধ করতে হবে। সহজে শ্রমিক যাতে বিদেশ যেতে পারে সেই ব্যবস্থা করে দিতে হবে।
৪. পাচাররোধে আইনের প্রয়োগ করতে হবে। দেশের টাকা দেশে ফিরিয়ে আনতে হবে।
সর্বোপরি দেশের কল্যাণের জন্য সবাইকে ভাবতে হবে। দুর্নীতিবাজ অসৎ লোকদের অন্যায়কে মোকাবেলা করতে পারলেই বঙ্গবন্ধুর সোনার বাংলা গড়ে তুলা সম্ভব হবে। যেখানে দুর্নীতি সেখানেই প্রতিবাদ। দেশ আবার ঘুরে দাড়াবে এই প্রত্যাশা রাখছি।
ইব্রাহিম সৈনিক
শিক্ষক