অনলাইন ডেস্কঃ কোনো সিদ্ধান্ত ছাড়াই ট্রাকে বালি ও পাথর লোড-আনলোড খরচ বৃদ্ধি করায় পাথর ও বালি বেচা-কেনা বন্ধ ঘোষণা করেছেন পঞ্চগড় জেলা পাথর-বালি যৌথ ফেডারেশন।রোববার (২৮ আগস্ট) সকালে পঞ্চগড় জেলা পাথর-বালি যৌথ ফেডারেশনের সভাপতি হাসিবুল হক প্রধান বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। এর আগে, গত শুক্রবার সন্ধ্যায় জেলার তেঁতুলিয়া উপজেলার ভজনপুর পাথর বালি ব্যবসায়ী সমিতির কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত এক বৈঠক শেষে এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
আরও পড়ুনঃ কক্সবাজারে ছুরিকাঘাত করে পর্যটকের ক্যামেরা ছিনতাই, আটক ৪
পাথর-বালি যৌথ ফেডারেশন সূত্রে জানা যায়, পঞ্চগড় জেলায় দীর্ঘদিন ধরে পাথর-বালি ট্রাকে লোড-আনলোড করার জন্য সিএফটি প্রতি ২ দশমিক ৮০ টাকা করে শ্রমিকদের দিয়ে আসছিলেন ব্যবসায়ীরা। সম্প্রতি জেলা ট্রাক ট্রাক্টর, ট্যাংকলরী ও কাভার্ড ভ্যান শ্রমিক ইউনিয়ন ও পঞ্চগড় জেলা মটর পরিবহন শ্রমিক ইউনিয়নের সভাপতি সম্পাদক ১০ আগস্ট লোড-আনলোডের দাম বৃদ্ধির জন্য পঞ্চগড় জেলা প্রশাসক বরাবর একটি লিখিত আবেদন করেন।
কিন্তু জেলা প্রশাসকের পক্ষ থেকে সিদ্ধান্ত আসার আগেই শ্রমিক ইউনিয়ন গত ২০ আগস্ট থেকে ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে ২ দশমিক ৮০ টাকার বিপরীতে ৫ দশমিক ৫০ টাকা করে নিতে শুরু করে। এতে করে ব্যবসায়ীরা যৌথ ফেডারেশনের সঙ্গে কয়েক দফা আলোচনা শেষে বালি ও পাথর বেচা-কেনা অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ ঘোষণা করেন।
জেলা পাথর-বালি ব্যবসায়ী ও সরবরাহকারী সমিতির দপ্তর সম্পাদক আব্দুর রউফ বলেন, ‘পঞ্চগড়ের ওই দুই শ্রমিক সংগঠন জেলা প্রশাসনকে তোয়াক্কা না করে মনগড়া ভাবে দাম বৃদ্ধির সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে। তারা জোর করে বেশি টাকা নিতে শুরু করে ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে। মূলত শ্রমিকরা মালিক/ব্যবসায়ীদের অধীনে কাজ করে। তারা যাই কিছু করুক মালিকদের জানাবেন। কিন্তু এই দুই সংগঠন সব কিছুকে আঙ্গুল দেখিয়ে একটা খারাপ পরিস্থিত সৃষ্টির জন্য এমন কাজ করেছে।’
তিনি আরো বলেন, ‘আমরা প্রশাসনকে শ্রদ্ধা করি। তাই এ বিষয়ে একটা সুষ্ঠু ও সঠিক সিদ্ধান্ত না হওয়া পর্যন্ত এবং বিশৃঙ্খলা এড়াতে অনির্দিষ্টকালের জন্য পাথর বালি কেনা-বেচা বন্ধ ঘোষণা করেছি।’
পঞ্চগড় জেলা মটর পরিবহন শ্রমিক ইউনিয়ন (২৬৪) এর সভাপতি আব্দুল লতিফ বলেন, ‘নিত্য প্রয়োজনীয় পণ্যের দাম বাড়ার কারণে শ্রমিকরা দীর্ঘদিন থেকে ট্রাকের লোড আনলোড খরচ বাড়ানোর দাবি জানিয়ে আসছিল। সেই দাবির প্রেক্ষিতে গত বৃহস্পতিবার (২৫ আগস্ট) থেকে ৪ টাকা নেওয়া শুরু করেছি।’
জেলা ট্রাক-ট্রাক্টর, ট্যাংকলরী ও কাভার্ড ভ্যান শ্রমিক ইউনিয়ন (২০০০) এর সাধারণ সম্পাদক জসিম উদ্দীন বলেন, ‘প্রথমে তেঁতুলিয়া লেবার শ্রমিক ইউনিয়ন দাম বৃদ্ধির আবেদন করে। এরপর ভজনপুর লেবার শ্রমিক ইউনিয়ন। পরে আমাদের ইউনিয়নের শ্রমিকরা আমাদের কাছে শ্রমের দাম বৃদ্ধির আবেদন করে। তাই আমরা যৌথ ফেডারেশন ও জেলা প্রশাসককে অবগতসহ লিখিতভাবে দাম বৃদ্ধির আবেদন জানিয়েছি।’
এ বিষয়ে জেলা প্রশাসক জহুরুল ইসলামের সঙ্গে মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, ‘শ্রমিকদের মূল্য বৃদ্ধির আবেদন আমরা পেয়েছি। এ বিষয়ে এখনো কোনো সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়নি।’