অনলাইন ডেস্কঃ কক্সবাজারের টেকনাফে মিয়ানমার সীমান্তের ওপারে গোলাগুলির শব্দ শোনা যাচ্ছে। এতে সীমান্ত এলাকার দুই গ্রামের ৪০০ পরিবার আতঙ্কে রয়েছে। সোমবার সকাল থেকে টেকনাফের হোয়াইক্যংয়ের খারাংগাগুনা ও উলুবনিয়া পাড়ার সীমান্তের বসবাসকারীরা ভারী অস্ত্রের গুলির শব্দ পান।
আরও পড়ুনঃ প্রেমিককে বাড়িতে ডেকে নিয়ে গণধর্ষণের শিকার এসএসসি পরীক্ষার্থী
বিষয়টি স্বীকার করে টেকনাফের হোয়াইক্যং ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান অধ্যক্ষ মাওলানা নুর আহমদ আনোয়ারী জানান, ‘তুমব্রুর পর এবার টেকনাফ সীমান্তে গোলাগুলির শব্দ পাওয়া যাচ্ছে। ফলে সীমান্তের দুই গ্রামের মানুষ আতঙ্কের মধ্য রয়েছে। আমরা তাদের খোঁজ খবর রাখছি।’
তিনি জানান, ‘তুমব্রুর পর এবার গত দুই দিন ধরে তার এলাকায় গোলাগুলি চলছে। ফলে খারাংগাগুনা ও উলুবনিয়া গ্রামের ঝুঁকিতে থাকা প্রায় ৪০০ মানুষের তালিকা তৈরি করেছি। এসব মানুষদের খোঁজ রাখছি। পরিস্থিতি বুঝে সংশ্লিষ্টদের নির্দেশে পরবর্তী পদক্ষেপ নেওয়া হবে।’
সীমান্তের বসবাসকারী মো. তাহের বলেন, সীমান্তে গোলাগুলির বিকট শব্দে এপারের লোকজন আতঙ্কের মধ্য রয়েছে। হোয়াইক্যংয়ের ১ ও ২ নম্বর ওর্য়াডের প্রায় ২ হাজার মানুষ ভয়ের মধ্য রয়েছে। ইতোমধ্যে জনপ্রতিনিধিরা আমাদের তালিকা তৈরি করে নিয়ে গেছেন। নাফনদের কাছাকাছি থাকায় আমরা অনেক ভয়ে আছি। তাছাড়া গত ২০১৭ সালে আগস্টে তাদের এলাকা দিয়েই মিয়ানমার থেকে রোহিঙ্গাদের ঢল নামে বলেও জানান তিনি।
এ বিষয়ে টেকনাফ উপজেলা ভারপ্রাপ্ত নির্বাহী কর্মকর্তা এরফানুল হক চৌধুরী বলেন, এই সীমান্তে গোলাগুলির খবর জনপ্রতিনিধির মাধ্যমে জেনেছি। বিষয়টি কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে। এছাড়া সীমান্তের ৩০০ মিটারের ভেতরে বসবাসকারীদের তালিকা করা হয়েছে। পরিস্থিতি অনুযায়ী এ ব্যাপারে পদক্ষেপ নেওয়া হবে। আমরা তাদের খোঁজ খবর রাখছি।
গোলাগুলির বিষয়টি খোঁজ নিচ্ছেন উল্লেখ করে টেকনাফ ২-বিজিবি ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লে. কর্নেল শেখ খালিদ মোহাম্মদ ইফতেখার বলেন, ‘সীমান্তে রাত-দিন চব্বিশ ঘণ্টায় বিজিবি সজাগ রয়েছে। যে কোনো পরিস্থিতি মোকাবিলায় আমরা প্রস্তুত রয়েছি। অবৈধ অনুপ্রবেশ ঠোকাতে কঠোর অবস্থানে বিজিবি।’
এদিকে নাইক্ষ্যংছড়ি তুমব্রু সীমান্তে সোমবার দুপুর ১টা পর্যন্ত কোনো ধরনের গোলাগুলির শব্দ পাওয়া যায়নি বলে জানিয়েছেন ঘুমধুম ইউনিয়নের ইউপি সদস্য মো. আলম। তিনি জানান, গতকাল থেকে একটু গোলাগুলি শব্দ কমেছে। যদিও সীমান্তের মানুষের মাঝে এখনো আতঙ্ক কাটেনি।
সম্প্রতি মিয়ানমার থেকে মর্টারশেল ও গোলার আঘাতে শূন্যরেখার একজন রোহিঙ্গা নিহতসহ ৬ জন আহত হয়েছেন। এর আগে মর্টারশেল ও গোলার ঘটনায় ঢাকাস্থ মিয়ানমার রাষ্ট্রদূত উ অং কিয়াউ মোকে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে চারবার তলব করা হয় এবং এসব ঘটনার তীব্র প্রতিবাদ জানানো হয় সরকারের পক্ষ থেকে। এরপরও গোলাগুলি বন্ধ হয়নি । গত দেড়মাস ধরেই গোলাগুলি চলছে বাংলাদেশ-মিয়ানমার সীমান্তে। ফলে প্রায় ২৫ হাজার মানুষ ভীতির মধ্য রয়েছে। এ ঘটনায় সীমান্ত এলাকার ৩০০ পরিবারকে অন্যত্র সরিয়ে নেওয়ার কথা ভাবছে সংশ্লিষ্টরা। এছাড়া গোলাগুলির ঘটনায় অসহায় হয়ে পড়েছে নোম্যানসল্যান্ডে অবস্থানকারী রোহিঙ্গারা।