আশিকুর রহমান : সুজিত বিশ্বাসের রচনা ও মিলন ভট্টাচার্যের পরিচালনায় পূজোর বিশেষ নাটক “বিজয়ার উপহার” । বরিশালের নামকরা মিষ্টি “রস কদমের” এর মালিক নিপেন ঘোষ। বউয়ের চাপে এইবার পূজাটা শশুড় বাড়ি ঢাকাতেই করতে হবে। পুরান ঢাকায় নিপেনের শশুড় বাড়ি। বরিশালের বড় বড় ইলিশ,মিষ্টিসহ অনেক কিছু নিয়ে সদর ঘাট লঞ্চ থেকে নামে। সাথে আছে নিপেনের মাশির ছেলে শরৎ।
এদিকে সকালে নিপেন রাগ করে বরিশাল চলে যাবে বলে ব্যাগ গুছাচ্ছে। শাশুড়ি একে একে বাড়ির সবাইকে ডেকে জিজ্ঞাসা করছে,জামাইয়ের সাথে কেউ বাজে ব্যবহার করেছে কিনা। এইবার নিপেন জানায়,“পূজা শুরু হয়ে গেলেও এখনো তার পূর্বের শর্ত অনুযায়ী পোশাক দুই সেট আসলো না কেন” । সবাই নিপেনকে শান্ত করতে চেষ্টা করে। শরৎ দাদাকে বুঝায়,পূজা চলা অবস্থায় গেলে অমঙ্গল হয়।
বিজয়া শরৎকে ধুতি পাঞ্জাবী উপহার দেয়। বিজয়া বলে “কাল বিজয়া, এই ধুতি পাঞ্জাবী পড়ে মায়ের কাছে যা চাইবেন, দেখবেন ঠিক পেয়ে যাবেন”। শরৎ সুন্দর করে বিজয়ার দেওয়া উপহার ধুতি পাঞ্জাবী পড়েছে। বিজয়াকে দেখানোর জন্য সারা বাড়ি খুঁজে ছাদে এসে পায়। ধুতি পাঞ্জাবী পড়া শরৎকে বিজয়া মুগ্ধ হয়ে দেখে। শরৎ এইবার তার পেছনে ফুল দিতে গেলে সেখানে ছন্দা ছুটে এসে বলে “অমলরা এসেছে তাড়াতাড়ি নিচে যা”। বিজয়া সঙ্গে সঙ্গে নিচেই নেমে যায়। ছন্দা শরৎকে জানায়,“অমল বিজয়ার হবু বর। ওদের বিয়ে ঠিক হয়ে আছে। এই পূজার পরেই ওদের বিয়ে। পূজা উপলক্ষে বিজয়ার শশুড় বাড়ি থেকে উপহার নিয়ে এসেছে”।
এই কথা শুনার পর থমকে যায় শরৎ। রাতে আধার তার কাছে বড্ড গভীর হতে থাকে। চারিদিকের ঢাকের শব্দ শরৎের কানে সিসা হয়ে ঢুকতে থাকে। অঙ্কুরেই ভালোবাসার এমন নির্মম মৃত্যু হবে,আশা করেনি শরৎ। নিজের প্রতি ভীষণ রাগ হয়। বিজয়ার বিয়ে ঠিক হয়ে আছে। এই কথাটি কেন এক বারো বললো না বিজয়া? অবশ্য বলার তো কোন কারণও নাই। সে কেন বলতে যাবে। কি দায় বিজয়ার। এমন নানান প্রশ্ন শরৎের মাথায় ঘুরতে থাকে। শরৎ আর এই বাড়িতে এক মিনিটও থাকতে চায় না। ওর দম বন্ধ হয়ে আসছে। কিন্তু আজ বিজয় দশমি বাড়ি থেকে বের হতে পারবে না। কারণ সে নিজেই এই দুহায় দিয়ে নিপেনকে আটকে ছিলো।
রাতে অমল অনেক মদ খেয়ে এসে বিজয়াকে নিয়ে আবারো বাইরে যেতে চায়। কিন্তু বিজয়া মাতাল অমলের সাথে বাইরে যেতে চায় না। উল্টো অমলকে অসুস্থ বলে তিরস্কার করে। কিন্তু মাতাল অমল জোর করেই বিজয়াকে নিয়ে যেতে চায়। বিজয়া একজন মাতালের সাথে যাবে না বলে ঘোষণা দেয়। অমল জোর করে বাজে ভাবে বিজয়াকে নিয়ে যেতে চায়। বিজয়া কোন উপায় না পেয়ে অমলের গালে কষে চড় মেরে দেয়। মাতাল অমল ক্ষিপ্ত হয়ে বিজয়ার উপর ঝাপিয়ে পড়লে শরৎ এসে ধাক্কা দিয়ে বিজয়াকে রক্ষা করে।
মুহূর্তেই বাড়ির বাকিরা সেখানে এসে উপস্থিত হয়। বিজয়া অমলকে বিয়ে করবে না বলে ঘোষণা দেয়। সবার সামনে বিজয়া শরৎকে বিয়ে করবে বলে জানায়। বিজয়ার এমন কথায় শরৎসহ সবাই অবাক হয়ে যায়। বিজয়া জানায়,“আমরা দুজন দুজনকে ভালোবাসি”। বিজয়া শরৎের হাত ধরে টেনে ছাদে নিয়ে আসে। বিজয়া এইবার শরৎের লেখা চিঠি এবং ছবি বের করে সামনে ধরে। শরৎ অবাক হয়,তার চিঠি এবং ছবি বিজয়ার কাছে দেখে। বিজয়া জানায়,“আপনার রুম পরিস্কার করতে যেয়ে এই চিঠি আর ছবি আমি পেয়েছি। সাঙহস করে কেন আমাকে দেননি”। শরৎ কিছু আমতা আমতা করে বলার চেষ্টা করে মাত্র।
বিজয়া শরৎের কথা থামিয়ে দিয়ে বলে,“কি বলে ছিলাম না। মায়ের কাছে আজকের দিনে মন থেকে কিছু চাইলে ঠিক পাবে। এইবার মিললো তো? চলো সময় নষ্ট না করে আমরা বাইরে ঘুরে আসি”বএমন দুষ্ট-মিষ্টি কাহিনি নিয়ে এগোতে থাকে “বিজয়ার উপহার” নোটকের গল্প।
“বিজয়ার উপহার” নাটকটিতে অভিনয় করেছেন, আবু হুরাইয়া তানভীর, নিশাত প্রিয়ম,মিলন ভট্টাচার্য, ফাতিমা হিরা, পামির হোসেনসহ অনেকেই। নাটকটি প্রচারিত হবে ৪ অক্টোবর মঙ্গলবার রাত ১০ টায় বেসরকারি টিবি চ্যানেল মাছরাঙাতে।