অনলাইন ডেস্কঃ গণতন্ত্র, মানবাধিকার ও নির্বাচন শিখতে বিদেশিদের কাছে না গিয়ে সরকারের কাছে আসতে গণমাধ্যমকে উপদেশ দিয়েছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন। তিনি বলেন, বাংলাদেশ গণতন্ত্রের নেতা। ব্রুনাইয়ের সুলতানের সফর নিয়ে সংবাদ সম্মেলনে এক প্রশ্নের জবাবে এ মন্তব্য করেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী।

আরও পড়ুনঃসংকট মোকাবিলায় দরকার পারস্পরিক সহযোগিতা ,বললেন খাদ্যমন্ত্রী

‘এ পরিস্থিতিতে সুষ্ঠু ভোট সম্ভব নয়’- মার্কিন রাষ্ট্রদূতের এ মন্তব্য নিয়ে এক প্রশ্নের জবাবে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘আপনারা (গণমাধ্যম) তাকে জোর করে বলান। সে (মার্কিন রাষ্ট্রদূত) বেচারা বাধ্য হয় উত্তর দিতে। আমি যখন যুক্তরাষ্ট্রে শিক্ষক হিসেবে ছিলাম, তখন সেই দেশের গণমাধ্যম মার্কিন বিভিন্ন ইস্যুতে প্রশ্ন করত। আমি যখন বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত হলাম, তখন ওই দেশের গণমাধ্যম আর কোনো প্রশ্ন করেনি। বিদেশি রাষ্ট্রদূতদের কাছে অভ্যন্তরীণ সমস্যা নিয়ে তারা কোনো প্রশ্ন করে না।’

তিনি বলেন, বাংলাদেশে আমাদের দুঃখ, আমরা ঔপনিবেশিকতার কারণে বিদেশি মানুষকে বেশি পছন্দ করি। সে কারণে তাদের কাছে যাই। এ অভ্যাস থেকে আমাদের বের হয়ে আসতে হবে। আর গণতন্ত্র বিভিন্ন দেশে বিভিন্ন প্রেক্ষিতের। বাংলাদেশ গণতন্ত্রের নেতা।

যুক্তরাষ্ট্রের প্রতি ইঙ্গিত করে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশে যখন গণহত্যা হচ্ছিল, তখন তারা ধারে-কাছেও আসেনি। মিয়ানমারে যখন গণহত্যা হয়েছে, তখন কোনো দেশ আশ্রয় দেয়নি। শুধু বাংলাদেশ আশ্রয় দিয়েছে। শেখ হাসিনা মানবিক কারণে মানবাধিকার রক্ষায় সীমান্ত খুলে আশ্রয় দিয়েছিলেন। আপনারা (গণমাধ্যম) অন্যের কাছে না গিয়ে আমাদের কাছে আসেন। আপনারা অন্যের কাছে যান বলেই তাঁরা বলেন।

ইউক্রেন নিয়ে জাতিসংঘে বাংলাদেশের অবস্থান জানতে চাইলে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশ চায় ইউক্রেন-রাশিয়া যুদ্ধ বন্ধ হোক। সমঝোতার মাধ্যমে সমাধান চায় বাংলাদেশ। রাশিয়া নিয়ে জাতিসংঘে বাংলাদেশের অবস্থান বিষয়ে তিনি বলেন, আমাদের অবস্থান হবে মানবকল্যাণে। আমরা কোনো পক্ষের লোক নই।

সংবাদ সম্মেলনে পররাষ্ট্রমন্ত্রী আরও বলেন, আগামী ১৫-১৭ অক্টোবর ব্রুনাইয়ের সুলতান হাজি হাসানাল বল্ক্কিয়াহ বাংলাদেশে রাষ্ট্রীয় সফরে আসবেন। সুলতানের এ সফরটি হবে বাংলাদেশে ব্রুনাইয়ের রাষ্ট্রপ্রধান পর্যায়ের প্রথম সফর। প্রতিনিধি দলে রাজপরিবারের সদস্য, পররাষ্ট্রমন্ত্রীসহ বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী এবং উচ্চ পর্যায়ের সংশ্নিষ্ট কর্মকর্তারা আসবেন।

তিনি বলেন, সুলতানকে শাহজালাল বিমানবন্দরে আনুষ্ঠানিক অভ্যর্থনা জানাবেন রাষ্ট্রপতি মোঃ আবদুল হামিদ। সফরকালে সুলতান রাষ্ট্রপতির সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ ও রাষ্ট্রীয় নৈশভোজে অংশগ্রহণ করবেন। সফরের দ্বিতীয় দিন প্রধানমন্ত্রী ও সুলতানের মধ্যে দ্বিপক্ষীয় বৈঠক অনুষ্ঠিত হবে। তাঁর সফরে দ্বিপক্ষীয় সহযোগিতা নিয়ে আলোচনার পাশাপাশি দুই দেশের বিমান চলাচল চুক্তি, বাংলাদেশি জনশক্তি নিয়োগ সহযোগিতা বিষয়ক সমঝোতা স্মারক এবং দুই দেশ কর্তৃক নাবিকদের সার্টিফিকেটের স্বীকৃতি সংক্রান্ত সমঝোতা স্মারক সই হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।