অনলাইন ডেস্কঃ দীর্ঘদিন ধরে রাজধানীসহ বিভিন্ন এলাকায় টাকা জালিয়াত চক্রের সদস্যরা বেশ সক্রিয়। দেশের বিভিন্ন এলাকায় রয়েছে জাল নোটের কারখানা। সম্প্রতি জাল টাকার চক্রের অনেক সদস্য আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর হাতে ধরা পড়েছে। তবে জালিয়াতির অভিযোগে মামলা হলেও অপরাধীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি হয় না। আসামিরা আইনের ফাঁকফোঁকর দিয়ে বেরিয়ে যায়।
আরও পড়ুনঃ দেশের সব বন্দরে স্ট্ক্রিনিং বাড়ানোর নির্দেশ
সংশ্নিষ্টরা বলছেন, জালিয়াতির বিরুদ্ধে কঠোর আইন না থাকায় পার পেয়ে যাচ্ছে অপরাধীরা। টাকা জালিয়াতি নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে আদালতে ঝুলছে সাত হাজারের বেশি মামলা। মামলা পরিচালনায় মনিটরিং না থাকা, আদালতে সাক্ষী হাজির করতে না পারা, সাজার সময়সীমা সুনির্দিষ্ট না থাকা এবং আইন কর্মকর্তাদের গাফিলতির কারণে বিচার কার্যক্রমে দীর্ঘসূত্রতা হচ্ছে।
মামলা হলেও শাস্তি নেই: জাল টাকা তৈরির অভিযোগে গত বছর রাজধানীসহ বিভিন্ন এলাকার থানায় ৪ শতাধিক মামলা করা হয়। এসব মামলায় আসামি ধরা হলেও অধিকাংশই জামিনে বেরিয়ে আসে। জামিনে বেরিয়ে তারা নাম-ঠিকানা পাল্টে ফেলে। এতে আসামিদের আর খুঁজে পাওয়া যায় না। সাজা হলেও তা কার্যকর করা যায় না। অনেক ক্ষেত্রে মূল আসামি ধরাছোঁয়ার বাইরে থাকায় টাকা জালিয়াতি চক্র আরও বেপরোয়া হয়ে ওঠে। যে হারে জাল টাকার মামলা হচ্ছে, সে তুলনায় নিষ্পত্তি অনেক কম। মামলা দ্রুত নিষ্পত্তি না হওয়ায় অপরাধীদের মধ্যে কোনো ভীতির সঞ্চার হয় না। প্রচলিত আইনে (১৯৭৪ সালের বিশেষ ক্ষমতা আইনের ২৫-ক ধারা) রয়েছে বড় ধরনের দুর্বলতা।
বিচারে বিলম্ব: সাধারণ দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালে জাল টাকার মামলার বিচার হয়ে থাকে। এতে সময় লাগছে বছরের পর বছর। মামলা করার ক্ষেত্রে দুর্বলতা থাকায় অধিকাংশ আসামি জামিনে বেরিয়ে যায়। এ প্রসঙ্গে ঢাকা মহানগর পিপি আব্দুল্লাহ আবু সমকালকে বলেন, জাল টাকা তৈরি করা ফৌজদারি অপরাধ। এসব অপরাধের বিচার দ্রুত বিচার আদালতে চলমান। সাম্প্রতিককালে কয়েকটি মামলায় অপরাধীদের সাজা হয়েছে। অনেক মামলা এখনও বিচারাধীন। রাষ্ট্রপক্ষ থেকে অপরাধীদের বিরুদ্ধে যথাযথভাবে সাক্ষ্য-প্রমাণ দাখিল করা হয়। অনেক ক্ষেত্রে সাক্ষী হাজির করতে না পারায় মামলার প্রক্রিয়া বিলম্ব হয়। রাষ্ট্রপক্ষ থেকে সর্বোচ্চ চেষ্টা করা হচ্ছে মূল অপরাধীদের যেন সাজা নিশ্চিত হয়।
ঢাকা আইনজীবী সমিতির সভাপতি মাহবুবুর রহমান বলেন, টাকা জাল করা প্রতিরোধে দেশে পৃথক কোনো আইন নেই। বর্তমানে দণ্ডবিধি-১৮৬০ এর ৪৮৯(ক)-(ঘ) ধারা এবং বিশেষ ক্ষমতা আইন-১৯৭৪ এর ২৫(ক) ধারা অনুযায়ী এ-সংক্রান্ত অপরাধের বিচার হচ্ছে। বিদ্যমান আইনে অপরাধীকে বিচারের আওতায় আনার ক্ষেত্রে নানা ধরনের সমস্যা তৈরি হচ্ছে। তাছাড়া জাল নোট-সংক্রান্ত মামলার শুনানির নির্ধারিত দিনে অধিকাংশ সাক্ষী আদালতে উপস্থিত থাকে না। এ কারণে মামলার কার্যক্রম অনেকটা বাধাগ্রস্ত হচ্ছে