স্পোর্টস ডেস্কঃ জন ক্যাম্পবেল আর ক্রেইগ ব্রেথওয়েট যেন পণ করে বসেছিলেন কোনো ধরনের ঝুঁকিই নেবেন না। রান উঠুক আর না উঠুক, উইকেটে পড়েই থাকবেন। ফলে প্রথম ১৫ ওভারে মাত্র রান উঠে ১৫। চা-বিরতিতে যায় ওয়েস্ট ইন্ডিজ।
বিরতির পর একটু রানের গতি বাড়লেও চড়াও হয়নি স্বাগতিকরা। ফলে ২৫ ওভার পর্যন্ত উইকেটও তুলে নিতে পারেনি বাংলাদেশ। অবশেষে ক্যাম্পবেল-ব্রেথওয়েটের ধীরগতির জুটিটি ভেঙেছেন মোস্তাফিজ।
২৬তম ওভারে মোস্তাফিজের যে বলে বোল্ড হয়েছেন ক্যাম্পবেল, সেটিও যে মারতে গেছেন এমন নয়। ডিফেন্ডই করেছিলেন ক্যারিবীয় ওপেনার, ইনসাইডেজ হয়ে বেল পড়ে যায়। ৭২ বলে ২৪ রান করে সাজঘরের পথ ধরেন ক্যাম্পবেল। ৪৪ রানের মাথায় প্রথম উইকেট হারায় ক্যারিবীয়রা।
পরের ওভারে আবারও উইকেট পেতে পারতেন মোস্তাফিজ। কিন্তু টানা দুই বলে রেইফার আর ব্রেথওয়েটের কঠিন ক্যাচ স্লিপে ডাইভ দিয়ে হাতে লাগালেও ধরতে পারেননি লিটন দাস।
অ্যান্টিগা টেস্টে এই প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত ২৮ ওভার শেষে ওয়েস্ট ইন্ডিজের সংগ্রহ ১ উইকেটে ৫২ রান। ব্রেথওয়েট ১৭ আর রেইফার ৫ রানে অপরাজিত আছেন।
বাংলাদেশকে জবাব দিতে নেমে শুরুটাই ধীরগতির ছিল ওয়েস্ট ইন্ডিজের। মোস্তাফিজুর রহমান আর খালেদ আহমেদ জুটি গড়ে বোলিং শুরু করেন। দুই ওপেনার ক্যাম্পবেল আর ব্রেথওয়েট তাদের প্রথম ৫ ওভারে এক রানও নেননি। অর্থাৎ মেইডেন যায় প্রথম ৫ ওভার।
স্বাগতিকদের প্রথম রান আসে ৩২তম বলে। এরপরও খোলস ছেড়ে বের হননি ক্যারিবীয় দুই ওপেনার। মোস্তাফিজ তার প্রথম চার ওভারই নেন মেইডেন। ৫ ওভারে ৪ মেইডেনসহ ১ রান দেন মোস্তাফিজ। খালেদ ৫ ওভারে ৩ মেইডেনসহ দেন ৩ রান।
প্রথম ১০ ওভারে মাত্র ৮ রান নেয় ওয়েস্ট ইন্ডিজ। ১৩ ওভারে নেয় ১০। অবশেষে ১৪তম ওভারে এসে রান কিছুটা বাড়ে তাদের। মেহেদি হাসান মিরাজকে একটি বাউন্ডারি হাঁকান ব্রেথওয়েট। তবে এরপর ক্যারিবীয় দলপতি আবার খোলসে ঢুকে পড়েন।
এর আগে অধিনায়ক সাকিবের ক্যারিয়ারের ২৮তম হাফসেঞ্চুরির পরও ৩২.৫ ওভারে ১০৩ রানে থামে বাংলাদেশের প্রথম ইনিংস।
৪৫ রানে নেই ৬ উইকেট। এমন জায়গায় দাঁড়িয়ে সাকিব বলতে গেলে একাই দলকে এগিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করেছেন। মেহেদি হাসান মিরাজকে সঙ্গে নিয়ে ৬৬ বলে ৩২ আর লোয়ার অর্ডারের এবাদত হোসেনকে নিয়েও ২৮ বলে ২২ রানের জুটি গড়েন সাকিব।
লোয়ার অর্ডারের এবাদতকে নিয়েই সাকিব তুলে নেন ফিফটি। তবে এভাবে আর কতক্ষণ! শেষ পর্যন্ত সাকিব ঝুঁকি নিতে গিয়ে মারতে গেলেন ক্যারিবীয় পেসার আলজেরি জোসেফকে।
তার সেই শট মিসটাইমিং হয়ে লংঅনে হলো ক্যাচ। ৬৭ বলে ৬ চার আর ১ ছক্কায় সাকিবের ৫১ রানের লড়াকু ইনিংসটি থামার দুই বল পরই অলআউট হয়ে গেছে বাংলাদেশ। সাকিব ছাড়া দুই অংকে পৌঁছতে পেরেছেন কেবল দুজন-তামিম ইকবাল (২৯) আর লিটন দাস (১২)।
শূন্য রানে আউট হয়েছেন ছয় ব্যাটার। তারা হলেন-মাহমুদুল হাসান জয়, নাজমুল হোসেন শান্ত, মুমিনুল হক, নুরুল হাসান সোহান, মোস্তাফিজুর রহমান আর খালিদ আহমেদ। এটি একটি বিশ্বরেকর্ড। এ নিয়ে তৃতীয়বারের মতো বাংলাদেশের ছয় ব্যাটার শূন্যতে আউট হলেন।
ওয়েস্ট ইন্ডিজের জেইডেন সিলস আর আলজেরি জোসেফ নেন ৩টি করে উইকেট। দুটি করে উইকেট কেমার রোচ আর কাইল মায়ার্সের।