অনলাইন ডেস্ক: দীর্ঘদিন ধরে ইসরায়েলের অব্যাহত আগ্রাসন, দখলনীতি ও গণহত্যার শিকার ফিলিস্তিন ইস্যুতে আবারও সরব হলো বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী। শুক্রবার (১৩ সেপ্টেম্বর) জাতীয় মসজিদ বায়তুল মোকাররমের উত্তর গেটে আয়োজিত এক বিশাল বিক্ষোভ সমাবেশে ফিলিস্তিনিদের প্রতি একাত্মতা ঘোষণা করেন সংগঠনটির সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল মাওলানা রফিকুল ইসলাম খান।

“ফিলিস্তিন যতদিন মুক্ত না হয়, যতদিন স্বাধীন না হয়, আমরা ততদিন তাদের পাশে থাকব। আমাদের লড়াই অব্যাহত থাকবে, আমাদের সংগ্রাম চলবে।”

রফিকুল ইসলাম খান সমাবেশে বলেন, ইসরায়েলি বাহিনী গাজায় একের পর এক গণহত্যা চালাচ্ছে। নারী, শিশু ও নিরীহ সাধারণ মানুষ প্রতিনিয়ত হত্যাযজ্ঞের শিকার হচ্ছে। অথচ বিশ্বশক্তির একটি অংশ এখনো ইসরায়েলের প্রতি অন্ধ সমর্থন দিয়ে যাচ্ছে। তিনি বিশ্ব মুসলিম সম্প্রদায়ের উদ্দেশ্যে আহ্বান জানান, “এই অন্যায়ের বিরুদ্ধে সবাইকে ঐক্যবদ্ধ হতে হবে।”

তিনি তীব্র ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, সম্প্রতি গাজামুখী আন্তর্জাতিক ত্রাণবাহী নৌবহরে হামলা চালিয়ে শত শত অধিকারকর্মীকে আটক করেছে ইসরায়েল। এই বহরে প্রায় ৪০টি জাহাজ ছিল, যা খাদ্য, চিকিৎসা সামগ্রী ও অন্যান্য মানবিক সহায়তা নিয়ে গাজাবাসীর উদ্দেশে রওনা দিয়েছিল। সুইডিশ জলবায়ু কর্মী গ্রেটা থুনবার্গসহ বিশ্বের ৩৭টি দেশের ৪০০ জনেরও বেশি অধিকারকর্মী, চিকিৎসক, সাংবাদিক ও সংসদ সদস্য এতে অংশ নিয়েছিলেন। কিন্তু ইসরায়েলি সেনারা আন্তর্জাতিক জলসীমায় গাজা উপকূল থেকে ১২০ কিলোমিটার দূরে এই নৌবহর আটকে দেয় এবং যাত্রীদের আটক করে।

এই ঘটনায় বিশ্বের বিভিন্ন দেশ ক্ষোভ প্রকাশ করেছে। তুরস্ক একে ‘ইসরায়েলের জলদস্যুতা’ বলে অভিহিত করেছে। বাংলাদেশ সরকারও ঘটনাটির নিন্দা জানিয়ে আন্তর্জাতিক আইনের চরম লঙ্ঘন আখ্যা দিয়েছে এবং আটক ব্যক্তিদের দ্রুত মুক্তির দাবি জানিয়েছে।

জামায়াত নেতা রফিকুল ইসলাম অভিযোগ করেন, ফিলিস্তিন ও গাজাকে পৃথক রাষ্ট্র হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়ার পরও কিছু শক্তিধর দেশ ইসরায়েলের পক্ষে অস্ত্র ও সমর্থন জুগিয়ে যাচ্ছে। তিনি বলেন—

“এটি মানবতার বিরুদ্ধে এক ধরনের খেলায় পরিণত হয়েছে। তবে আমরা বিশ্বাস করি, শহীদের রক্তের বিনিময়ে ফিলিস্তিন স্বাধীনতা অর্জন করবে ইনশাআল্লাহ।”

তার দাবি, জাতিসংঘ ও আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে অবিলম্বে কার্যকর পদক্ষেপ নিতে হবে। ইসরায়েলের আগ্রাসন রোধ করতে হবে এবং গাজার দখল হওয়া অঞ্চলগুলো মুক্ত করতে হবে। একই সঙ্গে আটককৃত ত্রাণকর্মী ও অধিকারকর্মীদের দ্রুত মুক্তি দিতে হবে।

বিক্ষোভ সমাবেশে সভাপতিত্ব করেন ঢাকা মহানগর উত্তর জামায়াতের আমীর মুহাম্মদ সেলিম উদ্দিন। এ ছাড়া জামায়াতের কেন্দ্রীয় ও মহানগর উত্তর-দক্ষিণের শীর্ষস্থানীয় নেতৃবৃন্দ এবং হাজারো কর্মী-সমর্থক এতে যোগ দেন। সমাবেশ শেষে একটি বিক্ষোভ মিছিলও অনুষ্ঠিত হয়।